ঢাকাশুক্রবার , ১৭ জানুয়ারি ২০২৫
আজকের সর্বশেষ

সদরপুরে ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়াঃ স্বাস্থ্যে ঝুঁকিতে

ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি
জানুয়ারি ১৭, ২০২৫ ৩:৪৫ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

 ফরিদপুরের সদরপুরে   অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলোর কালো ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে জনস্বাস্থ্য। এসব ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে ভাটার পাশে বসবাস করা বাসিন্দারা। অন্যদিকে ফসলি জমি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন কৃষকরা। ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষি জমির উর্বর মাটি। ফলে প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে কৃষি জমি। ইটভাটার কালো ধোঁয়ার কারণে মানুষ শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা ও ঠান্ডাজনিত নানা রোগে ভুগছেন। বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটা।
ফসলি জমির উর্বর মাটি ও গাছপালা গিলে খাচ্ছে  সদরপুর উপজেলার   বিপুল সংখ্যক ইটভাটা। সরকারি নিয়ম-নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে  উপজেলাতে গড়ে উঠেছে বিপুল সংখ্যক অবৈধ ইটভাটা। স্থানীয়রা বলেন, এক সময় রাতে লুকিয়ে জমির মাটি কাটলেও এখন আর তার প্রয়োজন পড়ে না। এখন দিনে প্রকাশ্যে মাটি কেটে নেয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা। ইটভাটায় ফসলি জমির মাটি বিক্রি চক্রের মূলহোতারা। ভূমিদস্যুদের পেছনে প্রভাবশালীদের হাত থাকায় স্থানীয়রাও প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। তাছাড়া বর্তমানে কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন ফলদ ও বনজ গাছগুলো কেটে ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন ইটভাটার মালিকরা।
স্থানীয়রা আরও বলেন, প্রায় অর্ধশতাধিক অনুমোদনহীন ইটভাটা আছে। এক সময় যে-সব এলাকায় মাঠের পর মাঠে দেখা যেত সবুজ ফসলের দৃশ্য। এখন সেসব এলাকায় একের পর এক গড়ে উঠেছে ইটভাটা। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় চারদিক আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। দিনের বেলাতেও এ এলাকায় নেমে এসেছে রাতের অন্ধকার। এসব এলাকার মানুষকে ইটভাটার এ বৈরী পরিবেশের সাথে যুদ্ধ করে বসবাস করতে হচ্ছে। অথচ এসব ইটভাটার বেশির ভাগই অনুমোদনহীন। যে কয়েকটার অনুমোদন আছে তাও মেয়াদোত্তীর্ণ। অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে একাধিকবার মানববন্ধন করে কোনো ফল পাইনি স্থানীয়রা। স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা অবৈধ ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন ইটভাটার মালিকরা। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয়রা আরও বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী আবাদি জমিতে বা ভাটার তিন কিলোমিটারের মধ্যে ৫০টি গাছ বা বাগান থাকলে ভাটা স্থাপনের কোনো নিয়ম নেই। লোকালয় থেকে তিন কিলোমিটার দূরে যেখানে জনবসতি নেই এমন জায়গায় ইটভাটা নির্মাণ করতে হবে। সারাদেশ উপজেলাগুলোতে কৃষি জমি ব্যবহার করেই প্রতি বছর গড়ে তোলা হচ্ছে নতুন নতুন ইটভাটা। একই সাথে ইটভাটার জন্য সর্বোচ্চ ৩ একর জমি ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ ইটভাটায় এ নিয়ম মানা হচ্ছে না। নদীপাড় সংলগ্ন এলাকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব ভাটা গড়ে তুলছে।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।