ঢাকারবিবার , ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
আজকের সর্বশেষ

বাড়ছে শীত, রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত উত্তরের মানুষ

এস, এম শাহাদৎ হোসাইন, রংপুর 
জানুয়ারি ২৬, ২০২৫ ৫:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

উত্তরের হিমেল হাওয়া ও শীতের প্রকোপে বিপর্যন্ত রংপুর, নীলফামারী, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগঁাও, দিনাজপুর ও পঞ্চগড়ের জনজীবন। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসের কারণে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ঠান্ডাজনিত রোগে। রংপুর অঞ্চলে ঠান্ডার প্রভাবে শিশুদের মধ্যে কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-জ্বরসহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত কয়েক ধরে উত্তরাঞ্চলের মানুষ ঘন কুয়াশা ও প্রচন্ড শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। দিনের বেলা সূর্য্যের আলো দেখা যাচ্ছে না। অনেক জায়গাতে বৃষ্টির মতো পড়ছে শিশির। গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কষ্ট পাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবি মানুষ। শীতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বয়স্ক মানুষ ও শিশুরা। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ ক্রমাগত বাড়ছে। কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, সর্দি-জ্বরের কারণে শতাধিক শিশু ভর্তি রয়েছে। বহির্বিভাগেও অন্যান্য সময়ের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি। আয়শা বেগম নামে এক অভিভাবক বলেন, শিশু সন্তান ফাতেমা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এক চিকিৎসক বলেন, উত্তরাঞ্চলের জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত কয়েক দিনে ৫৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও একই পরিস্থিতি দেখা গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মো. আলেমুল বাসার বলেন, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য স্যালাইন, নেবুলাইজার এবং ঔষধ মজুত রাখা হয়েছে। বহির্বিভাগে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি জটিল রোগীদের জেলা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের রেজিস্টার ডা. আ ন ম তানভীর চৌধুরী বলেন, কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেশি। অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে। শিশুদের সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, গরম পানি খাওয়ানো এবং পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরানো জরুরি। রংপুর সিভিল সার্জন ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী বলেন, শীতজনিত রোগের ঝুঁকি থেকে শিশুদের রক্ষা করতে গরম কাপড় ব্যবহার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে দেরি না করে হাসপাতালে নিতে পরামর্শ দেন তিনি। রংপুরের জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বলেন, শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত রংপুরের ৮ উপজেলায় ৫ হাজারেরও বেশি শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে এবং এই কার্যক্রম চলমান থাকবে।রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান বলেন, চিকিৎসক সংকট থাকা সত্ত্বেও প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার রোগীকে সেবা দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের সেবার মান উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় পরিধান এবং আগুন পোহানোর সময় সতর্ক থাকার আহবান জানান তিনি। 

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।