এস এম রাজ,বাগেরহাট
ব্যয় কমাতে এবার পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়েছে চিটাগুড় । এতে পণ্যটির দাম কমবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।গত বৃহস্পতিবার মোংলা বন্দরের ৮নং জেটিতে নোঙর করে চিটাগুড়বাহী জাহাজ এমটি ডলফিন-১৯। পাকিস্তান থেকে পণ্য আনা পানামার পতাকাবাহী জাহাজটি বন্দরে ভিড়লে কর্তৃপক্ষ আমদানি কারকদের স্বাগত জানায়। এর আগে, গেল ২২ জানুয়ারি পাকিস্তানের করাচি বন্দর থেকে পণ্যবোঝাই করে মোংলার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় জাহাজটি। সাত মিটার ড্রাফট ও ১৪৫ মিটার দৈঘের্যর জাহাজটিতে ৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিটাগুড় রয়েছে। পুরো চিটাগুড় খালাস শেষে কিছু অংশ মোংলার ইউনাইটেড রিফাইনারি অ্যান্ড বাল্ক স্টোরেজ লিমিটেড-এ পরিশোধন করা হবে। বাকি অংশ রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলার বাঘাবাড়িতে সড়ক ও নৌ-পথের মাধ্যমে নেওয়া হবে। এর আগে, বাংলাদেশি ফিডমিলগুলোর জন্য ভারত থেকে আমদানিকৃত চিটাগুড় ব্যবহার করা হতো। ভারত এই পণ্যে রপ্তানিশুল্ক বাড়িয়ে দেয়। তাই ব্যয় কমাতে এবার পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়েছে পণ্যটি। এতে চিটাগুড়ের দাম কমবে বলে জানান আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পিঅ্যান্ডপি ট্রেডিংয়ের প্রোপাইটর আনোয়ারুল হক। তিনি বলেন, এক সময় বাংলাদেশের ১৩টি সুগার মিল ছিল। এই মিলগুলো যখন সচল ছিল, তখন বাংলাদেশ থেকে চিটাগুড় রপ্তানি করা হত। আমাদের প্রতিষ্ঠান ১৯৮৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে চিটাগুড় রপ্তানি করেছে। এ থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসত দেশে। কিন্তু বেশিরভাগ মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে আমরা ভারত থেকে চিটাগুড় আমদানি করতাম। কিন্তু ভারত হঠাৎ করে চিটাগুড় রপ্তানিতে শুল্ক বৃদ্ধি করে দেয়। যার ফলে তাহলে তারা চিটাগুড়ের দাম বেড়ে যায়। বিকল্প হিসেবে আমরা পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় আমদানি করেছি। আশা করি পশুখাদ্য তৈরির কোম্পানি গুলোকে আমরা কম দামে সরবরাহ করতে পারব। যা দেশের পশু লালন-পালন সেক্টরকে সমৃদ্ধ করবে বলে দাবি করেন এই ব্যবসায়ী। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হার্বার অ্যান্ড মেরিন) এমডি শফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, নতুন নতুন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হলে বন্দরের আয় ও ব্যস্ততা বৃদ্ধি পায়। আমদানি ও রপ্তানিকারকদের মোংলা বন্দরের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলে জানান বন্দরের এই কর্মকর্তা। চিটাগুড় বা মোলাসেস সুগার মিলের বজর্য জাতীয় একটি পণ্য শিল্পের ভাষায় যাকে বাই প্রোডাক্ট বলে। মূলত সুগার মিল থেকে চিনি উৎপাদনের সময় যে গাঢ, চিটচিটে ও চিনিসমৃদ্ধ উপজাত পণ্য সংগৃহীত হয় তাকে চিটাগুড় বলে। বাংলাদেশে যখন ১৩টি সুগার মিল চালু ছিল, তখন চিটাগুড় রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হতো। তবে ধীরে ধীরে বাংলাদেশি সুগার মিলগুলো বন্ধ হতে থাকে। বর্তমানে অল্পকিছু সুগার মিল সচল রয়েছে বাংলাদেশে। যদি বাংলাদেশের সব সুগার মিল সচল রাখা যায়, তাহলে চিটাগুড়সহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করা লাগবে না এবং দেশের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হবে না বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।