দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ১১নং ইউনিয়ন নিঝুম দ্বীপ শতফুল এলাকায় এশারের নামাজ পড়া অবস্থায় মায়ের পাশ থেকে ১৭ বছরের এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার (২৩ মার্চ) সকাল ১০টার সময় এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন হওয়ার কথা থাকলেও অভিযুক্তদের সমঝোতার আশ্বাসে তা আর হয়নি। এর আগে গতরাত ৮টার সময় মা-মেয়ে নিজ ঘরে এশার এবং তারাবির নামাজ পড়ছিল। এমন সময় ঘরে কোনো পুরুষ লোক ছিলোনা। এ সুযোগে স্থানীয় সাহেদ মেম্বারের ছেলে আরিফের নেতৃত্বে ৬জন লোক কিশোরীকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। পরে মা-মেয়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এবং পার্শ্ববর্তী মসজিদের মুসল্লীরা ছুটে আসলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। লোকলজ্জায় মেয়ের বাবা থানায় অভিযোগ করেননি বলে জানান স্থানীয়রা। অভিযুক্ত আরিফের বাবা স্থানীয় নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার এবং ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি।
এছাড়া আরিফের নেতৃত্বে স্থানীয় দুলাল কেরানীর ছেলে মামুন, বাহারের ছেলে রুবেল, তাহেরের ছেলে কাউছার, ছায়েদল হকের ছেলে তাহের এবং মহিউদ্দিন হকারের ছেলে মেহরাজ ঘটনার সাথে জড়িত ছিলো বলে জানান ভুক্তভোগী পরিবার এবং স্থানীয়রা।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপ ইমাম পরিষদের সদস্যরা জানান, মা- মেয়ের চিৎকার শুনে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার আলামত দেখতে পান। এসময় ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে অভিযুক্তরা মেয়েটিকে একপর্যায়ে শ্বাসরুদ্ধ করে গলায় জখম করে। এই প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, মেয়েটির বাগদান হয়েছে, ঈদের পরে তার বিয়ে হওয়ার কথা রয়েছে। ফলে তার সাথে থাকা স্বর্ণালঙ্কার গুলোও অভিযুক্তরা নিয়ে গেছে বলে ভুক্তভোগীর পরিবার তাদেরকে জানিয়েছেন।
এসব অপরাধের বিরুদ্ধে তারা ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াসহ আজ বিক্ষোভ মিছিল এবং মানববন্ধন কারার কথা ছিল। কিন্তু অভিযুক্তরাসহ প্রভাব বিস্তারকারীরা তাদেরকে হুমকি দিয়ে আসছে। পরে সমঝোতার আশ্বাসে তারা প্রতিবাদ কর্মসূচি স্থগিত রেখেছেন বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইমাম পরিষদের দুইজন সদস্য। ঘটনার বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানান স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান লাভলী আক্তার। ধর্ষণ চেষ্টার অভিযুক্ত আরিফের বাবা সাহেদ মেম্বারের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনার বিষয়ে তিনি শুনেছেন এবং এ বিষয়ে মেয়ের বাবার ইচ্ছার উপর সমঝোতা করা হবে। স্থানীয় নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি এবং উপজেলা বিএনপির সদস্য পদেও রয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন। তার দলীয় পদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খোন্দকার আবুল কালাম। এ বিষয়ে হাতিয়া থানার তদন্ত ওসি খোরশেদ আলম জানান, ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।