ঢাকাশনিবার , ৪ জানুয়ারি ২০২৫
আজকের সর্বশেষ

শীতার্তদের পাশে দাঁড়ান

বার্তাকক্ষ
জানুয়ারি ৪, ২০২৫ ৪:৪০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

সম্পাদকীয় :

মাঘের শীতে নাকি বাঘও পালায়। মাঘ আসেনি। তবে পৌষের মধ্যেভাগে শৈত্যপ্রবাহ আর ঘনকুয়াশায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। তীব্র শীতে ভাসমান, ছিন্নমূল ও শ্রমজীবী মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে । হাসপাতালগুলোতেও বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। এ অবস্থায় শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। ঋতুর আবর্তনে শীত আসবে, এটাই স্বাভাবিক ।

এর সঙ্গে খাপ খেয়েই আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। তবে তীব্র শীতে গরিব ও দুস্থ মানুষের বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়। শীতে শিশু ও বৃদ্ধরা অন্যদের চেয়ে একটু বেশি কষ্টে থাকে। তাই যারা সামর্থ্যবান, তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত-শীতে পরিবারের সবাই যেমন ভালো থাকব, ঠিক তেমনই

অন্যদের পাশেও আমরা সাধ্যমতো দাঁড়াব। আমরা দেখি, শীতের শুরুতেই গরম কাপড় কেনার ধুম পড়ে যায় ৷ কেউ নতুন, কেউবা পুরোনো কাপড় কিনে সামর্থ্য অনুযায়ী। শীতে কর্মজীবী মানুষ খুব কষ্ট পায় । কুয়াশা আর ঠান্ডার মধ্যেও জীবিকার সন্ধানে সবকিছু অতিক্রম করে তাদের কাজে নামতে হয়। কুয়াশার চাদরে যখন প্রকৃতি ঢেকে থাকে, তখন অন্যদের মতো তাদেরও ইচ্ছা করে লেপের

নিচে শুয়ে থাকতে । কিন্তু দুমুঠো ভাতের জন্য তা সম্ভব হয় না। একদিন কাজে না গেলে বা কাজ না পেলে তাদের পরিবারে খাদ্য সংগ্রহ হয় না। দিনের কাজ’ করে বাড়িতে ফিরলেই কেবল পরিবারের জন্য দুমুঠো ভাত সংগ্রহ হয়। কিন্তু এত শীতেও তারা বাইরে বের হবে, এটা কল্পনা করতেও কষ্ট হয়। রোগীর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। বয়স্কদের তুলনায় শিশু ও বৃদ্ধের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

অনেকটা কম। সবচেয়ে কষ্টে আছে ফুটপাত ও বস্তির শিশুরা। যারা অন্য সময় দৌড়ে বেড়ায়, খেলাধুলা করে বেড়ায়, খালি গায়ে বিভিন্ন কাজে সর্বদা ব্যস্ত থাকে,

তারা এখন শীতের কাছে হার মেনেছে । তাদের গায়ে নেই কোনো গরম কাপড় । আবার কারো একটা জামাও জোটে না। বস্তির মধ্যেই তাদের থাকতে হচ্ছে। সেখানে প্রায় অলস দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। এসব শিশুর কথা কেউ তেমনভাবে না। যদিও কোনো কোনো সংগঠন, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান শীতবস্ত্র বিতরণ করে থাকে; তবে তা করা হয় মূলত শীত চলে আসার পর। এতে খুব অল্পসংখ্যক

শীতার্তকে বস্ত্র সরবরাহ করা সম্ভব হয়। অধিকাংশ শিশুই শীতের কাপড় থেকে বঞ্চিত হয়। সরকারিভাবে অনেক সময় শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা কিংবা সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে এগুলো এসে থাকে। আবার কখনো সরকারদলীয় নেতাদের মাধ্যমে আসে । শীতে যে কাপড় শীতার্ত গরিব মানুষ পাবে বলে ধারণা করা হয়, এক্ষেত্রে ঘটে তার উলটো। যাদের

কম্বল বিতরণ করতে দেওয়া হয়, তাদের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় শীতবস্ত্র সংগ্রহ ও বিতরণের প্রতিযোগিতা। বাকি যা থাকে তাও আবার চলে যায় প্রভাবশালী নেতার আত্মীয়স্বজনের কাছে। আবার শীতবস্ত্র বিতরণে দলীয়করণও লক্ষ করা যায়। শীতবস্ত্র পাবে-এমন যোগ্য ব্যক্তিকে ফাঁকা রেখে দলীয় মানুষকে একটার পরিবর্তে তিনটা পর্যন্ত কম্বল দেওয়া হয়। সাধ্যমতো আমরা যেন সর্বদা শীতার্ত মানুষের, বিশেষ করে শিশুদের পাশে থাকি-এটাই সবার প্রত্যাশা।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।