জেলা প্রতিনিধি,ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে আবারও আওয়ামী লীগের ২’শ ৯৪ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বিএনপির নেতা তিনি জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক। এই মামলায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ককটেল বিস্ফোরন, মারপিট ও বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এনে মামলাটি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুর রহমান। গত বুধবার (১ জানুয়ারী) রাতে মামলাটি এজাহার হিসেবে নথি ভূক্ত করা হয়। মামলার বাদী জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সত্যজিৎ কুমার কুন্ডু জানান, গত ১০ দিন আগে তিনি থানায় মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করতে অভিযোগ পত্রটি জমা দেন। দলের সিদ্ধান্তে এ মামলার বাদি তিনি হন। তবে তিনি মামলার অনেক আসামিকে চিনেন না বলে জানান মামলার বাদী। অপরদিকে থানায় মামলা হওয়ার খবর শুনে, মামলার এক আসামী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে হয়রানি মূলক মামলা দিয়ে নতুন বছরে উপহার দিলেন বিএনপি। তিনি জানান, একটি মহলের ইশারা ইঙ্গিতেই সব হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। মামলার অভিযোগে জানা যায়, মামলায় উল্লেখ যোগ্য আসামির মধ্যে ১ নম্বর আসামি করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার রায়, ২ নম্বর আসামি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সন্তোষ কুমার আগরওয়ালা ও ৩নম্বর আসামি করা হয় কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ঠাকুরগাঁও পৌরসভার সাবেক মেয়র আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যাকে ও সাবেক সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি দ্রৌপদী দেবী আগরওয়ালাকে। মামলায় উল্লেখ করা হয়, উল্লেখিত ২৯৪ জন সহ অজ্ঞাত নামা ৫০০ আসামিরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচীতে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি মারাত্মক অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় মামলার বাদি সত্যজিৎ কুমার কুণ্ডুসহ তাঁর লোকজনের উপর হামলা করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে ও ধাওয়া দিতে থাকে। আসামিদের সঙ্গে থাকা পিস্তলের ছোড়া গুলিতে উপস্থিত ছাত্র-জনতার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলি লেগে গুরুতর আহত হন। আসামিদের তাণ্ডবে সেই সময় মামলার বাদী শহরের ট্রাফিক মোড় থেকে দৌড়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় আসামিরাও বিএনপি অফিসের চারপাশে অবস্থান নেন। তারা ককটেল বিস্ফোরণ করলে বিএনপি’র এই নেতা প্রাণ রক্ষার্থে পার্টি অফিসে প্রবেশ করলে আসামিরা প্লাস্টিকের বোটলে প্রেট্রোল দিয়ে পার্টি অফিসে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এতে অফিসে আলমারিতে রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ কাগজ-পত্রসহ অফিস বিল্ডিং এর অবকাঠামে পুড়িয় ছাই হয়ে যায়।
এতে পার্টি অফিসের ৫টি ল্যাপ্টপ, ২টি টিভি, ১টি ফ্রিজ, একাধিক চেয়ার-টেবিল ও ৩টি এসি পুড়ে আঙ্গার হয়ে যায়। আনুমানিক ১ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে এবং সাক্ষীদের শারিরিক অবস্থা বেগতিক হলে ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। অসুস্থ থাকায় ও সাক্ষীদের কাছ থেকে আসামিদের নাম সংগ্রহ করে এজাহার দায়েরে বিলম্ব হয়েছে। ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শহিদুর রহমান বলেন, বুধবার রাতে সত্যজিৎ কুমার কুণ্ডু নামে ব্যাক্তি ২৯৪ জনের নাম উল্লেখ্য করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। হামলার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।