ভারতের মণিপুরে জাতিগত সহিংসতা শুরু হওয়ার দুই বছর পর রবিবার সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং পদত্যাগ করেছেন। বীরেন সিং রাজ্যে তার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিজেপির অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমন করতে এবং কংগ্রেসের অনাস্থা প্রস্তাব ও সংসদে আস্থা ভোটের সম্ভাবনা এড়াতে এই সিদ্ধান্ত নেন। এদিন সন্ধ্যায় তিনি রাজ্যপালের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন।
বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেসের অনাস্থা প্রস্তাব ও আস্থা ভোটের ক্ষেত্রে বিধায়কদের মধ্যে কিছু সদস্য নেতৃত্ব পরিবর্তনের পক্ষে ছিলেন এবং তারা দলের নির্দেশ উপেক্ষা করতে পারতেন বলে আশঙ্কা ছিল। এই আশঙ্কা এড়াতে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। রবিবার সকালে দিল্লি সফরে গিয়ে বীরেন দলীয় প্রধান জেপি নাড্ডা এবং দলের প্রধান কৌশলবিদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩ সালের মে মাসে জাতিগত সহিংসতার পর প্রায় ১২ জন বিধায়ক নেতৃত্ব পরিবর্তনের জন্য শক্তভাবে দাবি জানিয়েছেন এবং ছয়জন বিধায়ক নিরপেক্ষ অবস্থানে রয়েছেন। তবে স্পিকার ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ‘মতপার্থক্য’ ছিল। এদিকে বিপ্লবী কিছু বিধায়ক নিজেদের দাবি নিয়ে অমিত শাহর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন। এ ছাড়া কংগ্রেসের অনাস্থা প্রস্তাবের হুমকি ও আগামীকাল থেকে শুরু হওয়া বিধানসভা অধিবেশনকে সামনে রেখে, সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিধায়করা আস্থা ভোটে অংশগ্রহণ না করার সম্ভাবনা ছিল। সূত্রগুলো আরো জানায়, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে, বিজেপি এমন কোনো সংকট চায়নি, যা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ইতিবাচক ঘটনাকে ছাপিয়ে যেতে পারে। কুকি সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে সহিংসতা উসকে দিয়েছেন, তার পর থেকে বীরেন সিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আরো তীব্র হয়ে ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর ফাঁস হওয়া অডিও টেপের ওপর ভিত্তি করে ছিল তার অভিযোগ। অলাভজনক বেসরকারি ফরেনসিক ল্যাবরেটরি ট্রুথ ল্যাবস নিশ্চিত করেছে, অডিও টেপের ৯৩ শতাংশ বীরেনের কণ্ঠের সঙ্গে মিলে গেছে। ফাঁস হওয়া অডিও টেপগুলোর বিষয়ে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির কাছে প্রতিবেদন চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
সূত্র : এনডিটিভি
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।