মোঃ জামাল হোসেন লিটন।।
চুনারুঘাট উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট। ছড়া নদী-বিল থেকে জমিতে পানির চাহিদা মেটানো গেলেও খাওয়ার পানির জন্য গ্রামে গ্রামে চলছে হাহাকার। বিশেষ করে উজান এলাকায় এই সংকট আরও বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার খোয়াই নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। ইছালিয়া ও সুতাং নদীতে এখন পানি নেই। এ ছাড়া পানি উঠছে না গভীর নলকূপেও। এমনকি কোনো কোনো গ্রামে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর বেশি নিচে নেমে যাওয়ায় মোটরেও পানি তোলা সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলার দেওরগাছ গ্রামের আমিনা বেগম বলেন, আমাদের এলাকায় কখনো পানির অভাব হবে চিন্তাও করিনি। অথচ এখন টিউবওয়েলে পানি ওঠে না। কয়েক বছর পর হয়তো আর পানিই মিলবে না।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, নদী ও বিল শুকিয়ে যাওয়ায় বোরো জমিতে সেচের জন্য তোলা হচ্ছে ভূ-গর্ভস্থ পানি। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রায় ৪ হাজার গভীর ও অগভীর নলকূপের মাধ্যমে বোরো জমিতে সেচ দিচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, গ্রামে গ্রামে এখন বোরো ধানের জন্য বসানো শক্তিশালী সেচ প্রকল্পগুলো ভূ-গর্ভস্থ পানি টেনে নিচ্ছে। যে কারণে গ্রামের নলকূপগুলোতে পানি উঠছে না।
সাটিুয়াজুরী এলাকার এআই হারুন বলেন, আমাদের এলাকায় নদী না থাকায় জমিতে সেচ নিয়ে সমস্যা হয়। নেই খাল-বিলে পানি। গ্রামের চারপাশে অনেকগুলো সেচ প্রকল্প বসানো হয়। এগুলো মাটির নিচ থেকে পানি টেনে নেওয়ায় গ্রামের টিউবওয়েলগুলোতে পানি উঠছে না।
কৃষক আব্দুল আহাদ বলেন, গ্রামের কোনো টিউবওয়েলেই পানি ওঠে না। যাদের গভীর নলকূপ আছে, তাদের বাড়িতে কিছুটা পানি ওঠে।
সাংবাদিক খন্দকার আলাউদ্দিন বলেন, চারপাশের নদী, খাল-বিল ভরাট হয়ে গেছে। এসব জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় জমিতে সেচের জন্য ভূ-গর্ভস্থ থেকে পানি তোলা হচ্ছে। ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানি নিচে নেমে গেছে। এতে পানির এই সংকট দেখা দিয়েছে।
চুনারুঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষিজমিতে সেচের কারণে শুষ্ক মওসুমে পানির সংকট দেখা দেয়। আমাদের উপজেলায় বোরো ফসল পুরোটাই সেচ নির্ভর। তাই বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত পানির সংকট থাকবে।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।