ঢাকামঙ্গলবার , ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
আজকের সর্বশেষ

জলবায়ু ও দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন ও বীমা সম্পর্কিত পরামর্শ ও মতবিনিময় সভা

প্রতিদিন বাংলাদেশ
ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪ ৪:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

এস এম রাজ,বাগেরহাট 

জলবায়ূ পরিবর্তন মোকাবেলায় জাতীয়ভাবে সমন্বিত উদ্যোগ ও পরিকল্পনা জরুরী। জলবায়ূ পরিবর্তনে দায়ী নাহলেও বাংলাদেশ অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় দিন বাস্তুহীন, গৃহহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি ফসল, মৎস্য উৎপাদন কমছে। লবণাক্ততা বাড়ছে। খেটে খাওয়া মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশু স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে।

বাগেরহাটে জেলা পর্যায়ে জলবায়ু ও দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন ও বীমা সম্পর্কিত পরামর্শ ও মত বিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অ্যাওসেড’র উদ্যোগে কেয়ার বাংলাদেশের সহযোগিতায় মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে শহরের ধাঁসিড়ি হোটেল মিলনায়তনে (ঈউজঋও) প্রকল্পের আওতায় জেলা পর্যায়ে জলবায়ু ও দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন ও বীমা সম্পর্কিত পরামর্শ ও মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাগেরহাট জেলা যুবউন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সৈয়দ মুনিরুজ্জামান ।

আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন ম্যাপের সদস্য প্রফেসার আব্দুর রব, প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান,সুজনের সাধারন সম্পাদক এ কে হাসিব, বাধন মানব উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এস কে মঞ্জুরুল হাসান, সাংবাদিক ইসরাত জাহান প্রমুখ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাগেরহাট জেলা ম্যাপের যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ শওকত হোসেন । সভা পরিচালনা করেন ম্যাপের সদস্য সচিব মোঃ আসাদুজ্জামান ।

সভায় কপ ২৯ এর অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন সিডিআরএফআই প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক হেলেনা খাতুন। কপ ২৯-এ পূর্ববর্তী ও কপ চলাকালীন সময়ে অ্যাওসেডএর অংশগ্রহণ ও অর্জন বিষয়ে আলোচনা করেন। জলবাযু পরিবর্তনের দায় ও আমাদের ঝুঁকি বিষয়ে আলোচনা করেন অ্যাওসেড এর লানিং এড এ্যাডভোকেসী অফিসার এস.কে বাহলুল আলম।

আলোচকরা আরো বলেন, যে কোন নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অভিমত গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগী ও সংকটাপন্ন মানুষ কি ভাবে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠবেন বা কি ভাবে ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন তার সুস্পষ্ট ব্যবস্থাপনা থাকতে হবে। জলবায়ূ পরিবর্তন মোকাবেলায় দেশী ও আন্তর্জাতিক আইন-নীতিমালাগুলোর সমন্বয় করতে হবে। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে সচেতন ভাবে এসব কাজে সম্পৃক্ত হতে হবে।

মোঃ এনামুল হক, মোংলা (বাগেরহাট) :

ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির আয়োজনে বাগেরহাট জেলার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মঙ্গলবার ‘Enhancing Safe Drinking Water Security and Climate Resilience through Rainwater Harvesting’ প্রকল্পের শিখন অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহফুজ-উর-রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির কর্মসূচি প্রধান আবু সাদাত মনিরুজ্জামান খান। তিনি উল্লেখ করেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে মোংলা উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন চিলা, চাঁদপাই, সোনাইলতলা, মিঠাখালী, সুন্দরবন ও বুড়িরডাঙ্গার মোট ৭২হাজার ৩৬০জন মানুষের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। ৯হাজার ৯৩৫টি খানা, ৩৫টি কমিউনিটি ও প্রতিষ্ঠানভিত্তিক বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, ৪টি ভূপৃষ্ঠস্থ পানি শোধনের ব্যবস্থা হিসেবে সৌরশক্তিচালিত পন্ড স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ) স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ৫৪টি ক্লাইমেট অ্যাকশন গ্রুপ ও ৬টি ক্লাইমেট ইয়ুথ গ্রুপ গঠন করে কমিউনিটির প্রায় ২হাজার মানুষকে সংগঠিত করা হয়েছে। কর্মশালায় প্রকল্পটির বিস্তারিত কার্যক্রম ও অর্জনসমূহ উপস্থাপন করেন ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহফুজ-উর-রহমান। সমাপনী বক্তব্য রাখেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান।মোংলা উপজেলার জলবায়ু বিপদাপন্ন মানুষের নিরাপদ পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে ২০১৯সাল থেকে কাজ করছে ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে লবণাক্ততার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে ও খাবার পানির সংকট তীব্র হচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলার সবচেয়ে উপযোগী উপায় হিসেবে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপনে সহায়তা করছে ব্র্যাক জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি ও ডেনমার্ক সরকার। ’Enhancing Safe Drinking Water Security and Climate Resilience through Rainwater Harvesting’ প্রকল্পের আওতায় ৭২ হাজার ৩৬০ জন মানুষের হাতের কাছে পৌঁছে গেছে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা। ড্যানিশ মিনিস্ট্রি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্সের সহযোগিতায় প্রকল্পটি ২০২২সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা মোংলা উপজেলার জনগোষ্ঠীদের জন্য হাতের নাগালে নিরাপদ খাবার পানির বন্দোবস্থ করে তাদের জীবনমান উন্নত করার এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যা অন্য এলাকাতেও রূপায়ণযোগ্য। অনুষ্ঠানে প্রজেক্ট লিড উম্মে তানিয়া সুলতানা, প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. শফিকুর রহমান, সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, ব্র্যাক উপকারভোগী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।