জেলা প্রতিনিধি (পিরোজপুর)ঃ
পিরোজপুরের নাজিরপুরে জমি-জমার বিরোধে বিধবা নারীকে ঘরে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে।
৩১ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিকেল সাড়ে ৫ টার সময় উপজেলার দীর্ঘা ইউনিয়নের উত্তর দীর্ঘা গ্রামের সেনা সদস্য সাইফুল ইসলামের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত সেনা সদস্য সাইফুল ইসলাম দীর্ঘা ইউনিয়নের উত্তর দীর্ঘা গ্রামের মাহাবুব সরদারের ছেলে এবং কক্সবাজারের রামুতে সেনা সদস্য হিসেবে কর্মরত আছে। নির্যাতিত বিধবা নারী নাদিরা বেগম (৪৫) একই এলাকার মৃত মন্টু ফকিরের স্ত্রী।
বিধবার ছেলে নাহিদ এবং স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল বিধবা নাদীরা বেগম এবং সেনা সদস্য সাইফুল ইসলামের পরিবারের মধ্যে। গতকাল বিকেলে ছুটিতে থাকা সেনা সদস্য সাইফুল ইসলাম এনিয়ে বিধবা নাদিরা বেগমকে গালমন্দ করলে নাদিরাও প্রতিবাদ করে একপর্যায়ে সাইফুল ইসলাম নাদিরাকে তাদের ঘরের ভিতর আটকে মারধর করে এবং থানায় খবর দেয়। এঘটনায় বিধবার ছেলে নাহিদকেও মারধর করা হয়। এসময় পুলিশ ও এলাকার শতশত লোক উপস্থিত হয়ে সাইফুল ইসলামের ঘর থেকে বিধবা নারীকে উদ্ধার করে উপজেলা সাস্থ কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ডাক্তার হাসপাতালে ভর্তি রাখে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সেনা সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, বিধবা নারী আমার সম্পর্কে মামী হয়।তাকে কোন মারধর করা হয়নাই। গতকাল আমি আমার বাবার সাথে আমাদের জমিতে কাজ করে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটের সময় বাড়িতে এসে দেখি মামি আমাকে গালাগালি করে পাশের বাড়িতে দৌড়ে গিয়ে বলে সাইফুল আমাকে মারছে। তখন স্থানীয় কবির নামে আমার এক মামাকে বিষয়টি জানাই এবং আমাদের বাড়িতে আসতে বলি। মামা এসে দেখে নাদিরা মামি বিভিন্ন জায়গা দৌড়াদৌড়ি করে তখন সে মামিকে আমাদের বাসায় বসিয়ে রাখে এবং আমি থানায় খবর দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। এছাড়া তার ছেলে নাহিদ আমার দুই বোনকে মারধর করে।
এ বিষয়ে বিধবা নারীকে উদ্ধার করা নাজিরপুর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আনোয়ার হোসেন জানান,গতকাল বিকেলে সাইফুল ইসলাম নামে এক সেনা সদস্য মোবাইল ফোনে জানান তার বাড়িতে একজন মহিলাকে আটক রাখা হয়েছে যিনি এলাকায় মাদক ব্যবসা ও অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত। এমন সংবাদে সেখানে আমি সহ পুলিশের একটি টিম তাৎক্ষণিক উপস্থিত হয়ে এলাকার শতাধিক লোকজনের উপস্থিতিতে ওই নারীকে সাইফুল ইসলামের ঘর থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা সাস্থ কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের কাছে ওই নারীকে মারধরের খবর শুনেছি।
বিষয়টি নিয়ে নাজিরপুর উপজেলা সাস্থ কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ অশেষ প্রতিম রায় জানান, রাতে নাদিরা বেগম এবং নাহিদ নামে দুইজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাদের শরীরের বিভিন্ন যায়গায় আঘাত রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের ভর্তি রাখা হয়েছে। পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে বলা যাবে বুকে এবং পেটে কোন ধরনের ক্ষত হয়েছে কিনা।
এ বিষয়ে নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাহামুদ আল ফরিদ ভূইয়া জানান, এঘটনায় উভয় পক্ষ থেকেই অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।