সুনামগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার :
ছাতকে নিটল-নিলয় গ্রুপের প্রতিষ্ঠান নিটল কার্টিজ মিলের একটি ড্রেন ও দেয়াল নির্মাণ করতে গিয়ে এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়তে হয়েছে। এ নিয়ে দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী ও কারখানা কর্তৃপক্ষ। শহরের বাঁশখলা গ্রামবাসীর অভিযোগ ড্রেন ও দেয়াল নির্মিত হলে স্থানীয় হাওর -বিলের কৃষিতে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। এতে ফসলহানীসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। কারখানার ড্রেন ও দেয়াল নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে এবং এলাকাবাসীর বিভিন্ন ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবীতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে এলাকাবাসীর পক্ষে তালেব আলী নামে এক ব্যাক্তি একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ওই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ছাতকের সহকারী কমিশনার (ভূমি ) মোঃ আবু নাছের গতকাল বুধবার এলাকায় সরজমিন পরিদর্শন করেন এবং গ্রামবাসী ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। এসময় স্থানীয় লোকজন ড্রেন ও দেয়াল নির্মাণ কাজ বন্ধ করার দাবী জানান। বাঁশখলা গ্রামের বাসিন্দা কামাল মিয়া বলেন, বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলটি তৎকালিন সময়ে অতি কম মূল্যে বিক্রি করে নিটল-নিলয় গ্রুপের কাছে। কর্তৃপক্ষ কারখানার দায়িত্ব নেয়ার পর স্থানীয় এলাকাবাসী লোকজনকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং চাকুরী প্রদানের আশ্বাস দিলেও তা কখনো বাস্তবায়ন হয়নি। কারখানার কারনে ক্ষতিগ্রস্ত রনজু পাল অভিযোগ করে বলেন, কুমনা মৌজায় ২ টি দাগে ৯৩ শতক ভূমি জোর পূর্বক নিয়ে গেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে সম্প্রতি তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুছসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি এর কোন সমাধান পাননি। জমির আলী বলেন, মাধবপুর মৌজার তার ৩ কেদার জমি কারখানা কর্তৃপক্ষ নিলেও কোন টাকা পয়সা দেয়নি। দুদু মিয়া বলেন, ২০২১ সালে জমিতে মাটি ভরাট করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। সে সময় পুলিশ দিয়ে রেকর্ডকৃত বেশ কিছু খাস জমি দখলে নেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানার অধীনে কামারগাঁও মৌজায় তার জমি রয়েছে বলেও তিনি জানান।
বাঁশখলা গ্রামের সাবেক মেম্বার আবদুস ছত্তার জানান, খাস জায়গা দখল করে যে ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে এতে গ্রাম ও এলাকার ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি অত্র অঞ্চলের কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। সাবেক পৌর কাউন্সিলর শামছু মিয়া ও ধন মিয়া জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ যে ভাবে ড্রেন নির্মাণ করার কথা ছিল ওই ভাবে তারা ড্রেন ও দেয়াল নির্মাণ করছেনা। কর্তৃপক্ষ বর্তমানে ড্রেনের পানি ফসলি জমিতে ফেলার পরিকল্পনা করে যাচ্ছে।এলাকাবাসী কোন অবস্থাতেই ড্রেন নির্মাণের মাধ্যমে ফসলী জমির ক্ষতি হতে দিবে না। ছাতকস্থ নিটল-নিলয় গ্রুপের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রিয়াজ আহমেদ অভিযোগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। এব্যাপারে ছাতক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আবু নাছের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি এ তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে একটি তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হবে।
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।